শ্রীমঙ্গলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছেন মানবিক ইউএনও 

মোঃ কাওছার ইকবাল, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার তৃনমুল পর্যায়ের খেটে খাওয়া মানুষ, বিশেষ করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জীবনযাপন মান উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও উন্নয়ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি তাদের সুখদুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে নিয়মিত পরিদর্শনে ব্যস্ত সময় কাটান শ্রীমঙ্গলের সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন।
এমনই সদিচ্ছা সম্পন্ন মানবিক মূল্যবোধের একজন কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, মূলত, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), যেখানে সকলকে নিয়ে অংশীদারীত্বমূলক উন্নয়ন, মানে সকলকে একসাথে নিয়েই উন্নয়নের পদযাত্রায় বাংলাদেশ। এই সকলের মধ্যেতো আমাদের সকল মানুষ আছে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে নিয়ে যদি আমরা একসাথে না এগিয়ে যাই, তাহলেতো বাংলাদেশের উন্নয়ন হবেনা।
আর আমাদের শ্রীমঙ্গলের উন্নয়নের একটা বড় অংশ, যা আমি বিশ্বাস কবি আমাদের নৃ-গোষ্ঠিরা। তাদের একটি বৈচিত্রময় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আছে। সেই ক্ষুদ নৃ-গোষ্ঠিদের শিশুদেরকে যদি আমরা সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারি, তাহলেই আমরা তাদেরকে ২০৪১ এর বাংলাদেশের সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে পারবো। তাহলে অবশ্যই তারা বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, সরকারের এই মূহুর্তে নানা ধরনের উদ্যোগ বা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি জনগনের মাঝে একক গৃহনির্মাণ অব্যাহত রেখেছে। তাদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষা বৃত্তি চালু হয়েছে। বিশেষ করে তাদের যে কন্যা সন্তান রয়েছে, নৃ-গোষ্ঠি জনগনের শিক্ষার্থীদের যাতাযাত সুবিধার জন্য বাই-সাইকেলও বিতরণ করা হচ্ছে। এগুলো বিতরণের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের কাছে আরও তালিকা চাওয়া হয়েছে। আমরা পূনরায় তালিকা প্রেরণ করেছি। এগুলো আসলেই আমরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছাত্রীদের কাছে পৌছে দিব।
আর, আমাদের শ্রীমঙ্গল যেহেতু একটি বৈচিত্রময় উপজেলা, এই উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের পর্যটনেও বড় ভূমিকা বাখার সুযোগ রয়েছে। আমি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। জানিনা আমি কতটুকু পারছি বা পারবো। তবে আমি আমার চেষ্টা চালিয়ে যাবো, যতদিন আমি দায়িত্বে আছি।
নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে গতকাল ২০ আগস্ট রবিবার তিনি পরিদর্শনে যান শ্রীমঙ্গলের খাসি উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকা ৬নং হোসনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জি।
খাসি উপজাতি অধ্যুষিত পাহাড়ি এসব এলাকা একসময় ছিল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন। দূর্গম এসব এলাকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠী জীবনমান যেমন ছিল যেমন নিম্নমুখী, তেমনী যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল দূর্ভোগে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থায় খাসি জনগোষ্ঠী ছিল সব থেকে পিছিয়ে।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মাত্রার উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এইসব জনপদে। এর ফলে দৃশ্যমান উন্নয়নে জীবনযাত্রা পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। আর এসব উন্নয়নে হাতে কলমে কাজ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
এসব এলাকা পরিদর্শনে ব্যস্ত সময় কাটান শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন মহাদয়। এদিন তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া দুটি ঘর পরিদর্শন করেন। উনার সফর সঙ্গি ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফ হোসেন খান।
এসময় তিনি ৬নং হোসনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জির পুঞ্জি প্রধান ওয়েল সুরং এর হাতে তুলে দেন স্কুলের শিক্ষার্থীর জন্য অক্ষরবিন্যাস খেলার সামগ্রী ও পুঞ্জিতে বসবাসরত যুবদের জন্য ফুটবল এবং পুঞ্জির কমলমতি শিশুের জন্য উপহার সামগ্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *