সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: একেকটি কন্টেইনার যেন শক্তিশালী বোমা

ডেস্ক রিপোর্টঃ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সময় পরপর ১৫ থেকে ২০টি কন্টেইনারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে । সে সময় প্রতিটি কন্টেইনার একেকটি শক্তিশালী বোমায় পরিণত হয়।

শনিবার রাতে লাগা আগুন রোববার বেলা ১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এখনো কিছুক্ষণ পরপর শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীও রয়েছেন। তবে তাদের পরিচয় এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় ২৬ একর জায়গার ওপর কনটেইনার ডিপোটি অবস্থিত। এতে কয়েক হাজার কন্টেইনার রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, ডিপোর ভেতরে ৫০০ মিটারের একটি টিনের শেড রয়েছে। এ শেডের পুরো অংশ উড়ে গেছে। বাতাসে ওড়ছে কেবল ছাই। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে টিনের ভাঙা অংশ।

কিছুক্ষণ পরপর শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ। শেডের আশপাশ ঘুরে দেখা যায়, কোথাও আগুন জ্বলছে। কোথাও ধোঁয়া উড়ছে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে পুরো এলাকা।

চট্টগ্রামের পাশাপাশি কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের প্রায় ২০০ কর্মী আগুন নেভাতে কাজ করছেন।

পানি সংকটে কন্টেইনার ডিপোর আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। ভোরের দিকে এসে পানি ফুরিয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে পারছিলেন না।

রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা রক্তের জন্য হ্যান্ডমাইকে একের পর এক ঘোষণা দিচ্ছেন। যাদের রক্তের প্রয়োজন এবং যারা রক্ত দিতে চান তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সবাইকে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের দিকে যেতে বলা হয়েছে।

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেডসহ মোট আইসিইউ বেড মাত্র ১৯টি। সব বেডেই অগ্নিকাণ্ডে আহতরা চিকিৎসাধীন আছেন।

রাতেই চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।

এ অবস্থায় আইসিইউ সংকট দেখা দিলে রোগীদের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচে) আইসিইউতে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী জানান, দগ্ধ ও আহতদের হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিটে নেয়া হয়েছে। রক্তের প্রয়োজন। সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সব চিকিৎসককে হাসপাতালে আসার অনুরোধও জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *