সাংবাদিক ইসহাক কাজলের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী

ডেস্ক রিপোর্টঃ

বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কারে ভূষিত সাহিত্যিক, বিপ্লবী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড ইসহাক কাজলের ১০ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী।

ইসহাক কাজল প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর একজন সচেতন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়ে দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকায় চাকরি হারাতে হয় তাঁকে। তিনি আজীবন গণমানুষের পক্ষে লড়েছেন। সমাজের প্রান্তিক মানুষের ভরসাস্থল ছিলেন তিনি।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনসহ বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে তাঁর ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ।

রাজনৈতিক জীবনে স্বাধীনতা উত্তর সময়ে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক, সিলেট জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি, সিলেট জেলা সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়ন ও সমবায় সমিতির সভাপতি, সিলেট জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মৌলভীবাজার জেলা শাখার সম্পাদক ছিলেন।

প্রবাসী হওয়ার পর একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যুক্তরাজ্য ইউনিট কমান্ডের নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আন্দোলন, সিলেট বিভাগ আন্দোলনসহ নানা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ ইসহাক কাজল সাহিত্য ও সাংবাদিকতায়ও ছিলেন সমুজ্জ্বল। ১৯৬৯ সালে গণমানুষের কবি দিলওয়ার ‘সমস্বর লেখক ও শিল্পী সংস্থা’ গঠন করলে তিনি এর যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সাল থেকে পেশাদার সাংবাদিকতা শুরু করেন।

২০০০ সালে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য লন্ডনে চলে আসেন। সে সময় থেকেই বিলাতের সবচেয়ে পুরোনো বাংলা সংবাদপত্র সাপ্তাহিক জনমতের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও পরে পলিটিক্যাল এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বিলাত থেকে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা তৃতীয় ধারার প্রধান সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বও পালন করেছেন। তাঁর লেখনীর মূল শক্তি ছিল সাধারণ মানুষ। সম্পাদনাসহ তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২১টি।
ইসহাক কাজল ১৯৪৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি প্রবাসী লেখক পুরস্কারে ভূষিত হন।

Leave a Reply