১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক শাসন জারি করেছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতা দখলের উপলক্ষ খুঁজছিলেন এরশাদ। মন্ত্রীর বাড়িতে কুখ্যাত খুনি ইমদু ধরা পড়ার পর সেই উপলক্ষ পেয়েছিলেন এরশাদ। কি ঘটেছিল সে সময়? এরশাদের সামরিক শাসন জারির সেই দিনটির কথা মনে রেখে লেখাটি পাঠকদের জন্য আবার প্রকাশ করা হলো।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে নিহত হন ১৯৮১ সালের ৩০ মে। আর তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করেন ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ। জিয়া নিহত হওয়ার পর থেকেই সামরিক শাসন জারি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে এ জন্য দরকার ছিল একটা উপলক্ষের। সেই উপলক্ষ তৈরি হয় ১৯৮২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন যুব প্রতিমন্ত্রী আবুল কাশেমের বাসা থেকে আটক করা হয় কুখ্যাত সন্ত্রাসী ইমদাদুল হক ইমদুকে। তখন নতুন রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবদুস সাত্তার। সেই ঘটনার তিন দিন পরে, ১১ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলে পুরো মন্ত্রিসভা বাতিল করেন তিনি। আর এর প্রায় দেড় মাসের মধ্যে ক্ষমতা দখল করে সামরিক শাসন জারি করেন জেনারেল এরশাদ।
কালীগঞ্জের ইমদু যুবদল করতেন। তিনি যখন মন্ত্রীর বাড়ি থেকে আটক হন, তখন ক্ষমতায় বিএনপি সরকার। তারপরও মিন্টো রোডের মন্ত্রীর বাসা থেকে ইমদুকে আটক করা হয়েছিল বিশাল আয়োজন করে। রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। সেই ইমদুকে আটক করার ঘটনা নিয়ে এখনো আছে নানা ধরনের জল্পনা–কল্পনা। অনেকে একে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেও দেখেন। একটা প্রচলিত ধারণা হচ্ছে ঘটনাটি আসলে ঘটানো হয়েছিল, অনেক কিছুই পূর্বপরিকল্পিত, যাতে সামরিক শাসন জারি করা সহজ হয়।
আসলে সেদিন কী ঘটেছিল? কীভাবে আটক হয়েছিলেন ইমদু? সেই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিরা কী বলছেন? আর জেনারেল এরশাদই–বা কী করেছিলেন তখন? ঘটনার ৪০ বছর পরে সবার বক্তব্য এক জায়গায় করলে নতুন কোনো উপসংহারে আসা যায় কি না, সেটাই বরং দেখা যাক।