জুড়ীতে ৩ মাস পর শাহানা হত্যার রহস্য উদঘাটন গ্রেপ্তার ২

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ

গত ৩ মাস আগে শিলুয়া চা বাগানের আরমান আলীর মেয়ে শাহানা বেগম (১৬) এর মৃতদেহ পানি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর শাহানার মৃত্যুর বিষয়টি হত্যা হিসেবে তদন্তে নামে জুড়ী থানা পুলিশ।

ঘটনার তিন মাস পর গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ফেবুয়ারি) জুড়ী থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শাহানার হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে শাহানার বোন জামাই উজির মিয়া ও লালন পাশী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর আটক লালন পাশী শাহানাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয় এ মর্মে শুক্রবার ৩ ফেব্রæয়ারি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ব্যাপারে জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন জানান, গত বছরের ২৬ শে অক্টোবর জুড়ী উপজেলার শিলুয়া চা বাগানের জনৈক আরমান আলীর মেয়ে শাহানা বেগম (২৬) বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের তিনদিন পর ২৯ অক্টোবর ২০২২ তারিখ বাংলাদেশ ভারত সীমান্তবর্তী জুড়ি উপজেলার তালগাং নদীতে নিখোঁজ শাহানা বেগমের অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের বাবা লাশ শনাক্তের পুলিশ তার অনুমতিক্রমে জুড়ী থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। জুড়ী থনা পুলিশ শাহানার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকান্ড হিসেবে আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনানার ৩মাস পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় জুড়ী থানা পুলিশ। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, নিহত শাহানার ৬ বছর আগে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের মো: সিরাজ মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বিয়ের ৩ মাসের মধ্যেই বাবার বাড়িতে ফিরে আসে শাহানা। বাবার বাড়ীতে অবস্থানকালে শাহানার সাথে একই বাগানের এক যুবক লালন পাশীর সাথে গত দুই বছর ধরে শাহানার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। সম্পর্কের একপর্যায়ে বেশ কয়েকবার তাদের শারীরিক সম্পর্কও হয়। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি এলাকাবাসীসহ মেয়েটির বোনের স্বামী জানতে পেয়ে তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এর-ই মধ্যে শাহানার বোন জামাই উজির মিয়া শাহানার সাথে জোরপূর্বক শারীরিক মেলামেশার চেষ্টা করে। শাহানার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলতে ব্যর্থ হয়ে শাহানার প্রেমিক লালনের সহায়তায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে শাহানার বোন জামাই উজির মিয়া। পরে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রেমিক লালন পাশী ও দুলাভাই উজির মিয়া। ঘটনার দিন মোবাইল ফোনে শাহানাকে ডেকে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে। শাহানা হত্যার দায় স্বীকার করে শুক্রবার বিকেলে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবান্দি দেয় আসামি লালন পাশী।

Leave a Reply