শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
বৃষ্টি ও শীতপ্রবন শ্রীমঙ্গলে ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়েছে সূর্য। এতে ভোর থেকেই কনকনে বাতাসে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘন কুয়াশায় সূর্য ঢেকে যাওয়ায় শীত জেঁকে বসেছে। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে তাপমাত্রা আরো কমে আসার সাথে সাথে রাতে ঘন কুয়াশাও দেখা দেবে।
শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শহরের রেল স্টেশন এলাকা ঘুরে ছিন্নমূল শিশুদের খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহাতে দেখা গেছে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে ভানুগাছ সড়কে দেখা গেল দূরের বাগান থেকে দিন মজুরদের ঠেলায় করে বাগানের ফল ফসলাদি নিয়ে শহরে আসতে। কুয়াশার কারণে শ্রীমঙ্গলের সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। হিমেল বাতাসকে উপেক্ষা করে স্কুলগামী শিশুদের শীতের পোষাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে। চা শ্রমিকসহ কৃষি খামারে কাজ করা শ্রমিকরা তীব্র ঠান্ডায় দিন কাটাচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী আনিছুর রহমান জানান, ‘বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগেরদিন মঙ্গলবার একই সময় রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বায়ুমন্ডলে আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা কিছুটা বেশী হলেও ঘন কুয়াশায় সূর্য ঢেকে যাওয়ায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরো ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া জানুয়ারি মাস জুড়েই তাপমাত্রার পারদ নি¤œমুখী থাকাসহ এ মাসেই একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে, এতে তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে’ বলে এই আবহাওয়াবিদ জানান।
অন্যদিকে শীত বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়েছে। ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি ও শাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের চেম্বারে শীতজনিত অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা নিতে ভীড় দেখা গেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘কিছু রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এটা স্বাভাবিক পর্যায়ে। তবে শীতজনিত ডায়রিয়া বা অন্য যে কোন আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত সতর্কতামুলক ব্যবস্থা রয়েছে’।
৮ জানুয়ারির শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস থেকে দেয়া এক আবহাওয়া চার্ট অনুযায়ী, জানুয়ারিতে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এ মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি (৬-৮ডি. সে.) থেকে তীব্র (৪-৬ডি. সে.) এবং দেশের অন্যত্র দুই থেকে ৩টি মৃদু (১০-৮ডি.সে.) থেকে মাঝারি (৬-৮ডি.সে.) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।#