মৌলভীবাজারে বিএনপির মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের হামলা,সভাপতি নাসেরসহ আহত ২০

সোলেমান আহমেদ মানিক, মৌলভীবাজার-

বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি মতে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি ও অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনের মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। হামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমানসহ অন্তত ১৫/২০ জন আহত হয়েছেন।

দেশব্যাপী জেলাভিত্তিক বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি
১১ মার্চ/২৩ইং শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী সকল নেতা-কর্মীদের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, নিত্যপণ্যের মূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে মানববন্ধন করে বিএনপি।

স্থানীয় লোকজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠসংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামীলীগ। দুপুর ১২টায় কর্মসূচি শেষে করে তাঁরা মিছিল নিয়ে চলে গেলে মানববন্ধনের জন্য শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সেই জমায়েতকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শহীদ মিনারসংলগ্ন পৌর চত্বরে উপস্থিত হন। এরপর সেখানেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পৌর চত্বর থেকে সরে গিয়ে শাহ মোস্তফা সড়কের দিকে অবস্থান নেয়। এসময় মৌলভীবাজার শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। এসময় উভয় দলের মুখোমুখি অবস্থানে শহরে থমথমে অবস্থা তৈরি হয়।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, হামলায় এম নাসের রহমান চোখের নিচে ইটের আঘাত পান। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। এছাড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন তালুকদারসহ অন্তত ২০/২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সিলেটের সিটি মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমে জানান, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা আমাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা করে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ইতিপূর্বে মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঘটেনি। তিনি অভিযোগ করে জানান, হামলার সময় পুলিশ দাড়িয়ে ছিল, তাদের চোখের সামনেই প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এ হামলার মাধ্যমে সিলেট বিভাগের সহনশীল রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভঙ্গ হলো।

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, আমাদের শান্তি সমাবেশ ছিল। আধা ঘণ্টা পরে আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়ে যেত। শেষ পর্যায়ে এসে বিএনপি উদ্দেশ্য মূলক ভাবে সমস্যা তৈরি করেছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে শহীদ মিনারে শান্তি সমাবেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ দুপুর ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে বেরিয়ে যায়। মিছিলটি শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কে পৌঁছালে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করে। জমায়েত থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশ্লীল স্লোগান ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়। এটা শোনার পরই মিছিল থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহীদ মিনার এলাকায় ফেরত আসেন এবং বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়।