ডেস্ক রিপোর্টঃঃ
বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মৈত্রী ধরে রেখে এ মেলবন্ধনকে আরও এগিয়ে নিতে সবাইকে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অডিটোরিয়ামে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৮তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালায় তিনি এই আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ সেখানে বাংলাদেশি শিল্পীদের আঁকা পরাধীন স্বদেশের অমর বিপ্লবীদের ছবি নিয়ে ‘পোর্ট্রেট অব রেভ্যুলেশনারিজ’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি, প্রতিরোধের দর্শন ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য অনুপ্রেরণার।
তার প্রতিশ্রুতিই ছিল সম্প্রীতির। নেতাজীর নেতৃত্বের মডেলই ছিল ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে যোগ্যতা ও সমতার ভিত্তিতে নাগরিকদের সমান অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে।’
নেতাজীর জন্মদিনের এই উদযাপন দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বিখ্যাত ব্যক্তিদের সমৃদ্ধ জীবন আমাদের উত্তরাধিকারদের সঠিক পথ দেখাবে। আমাদের একান্ত গৌরবের ইতিহাস আলোকবর্তিকা হিসেবে পথ দেখাবে’।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও সুন্দর করার ক্ষেত্রেও অনুপ্রেরণার। আমি উদ্বুদ্ধ করবো, দেশ গঠনে অবদান রাখা এসব বিখ্যাত ব্যক্তির অবদানগুলো তুলে ধরা হোক। এতে দুই দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের মেলবন্ধন বজায় থাকবে। বিশেষ করে দুই দেশের মানুষের মন ও আত্মার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।’
নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে অখণ্ড ভারতবর্ষের বিখ্যাত বিপ্লবীদের পোট্রেট এঁকেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা। ঢাকার ২০ জন শিল্পী ৪০ জন অমর বিপ্লবীর ছবি এঁকেছেন, যেগুলো প্রদর্শনীতে স্থান পায়।
যাদের পোট্রেট প্রদর্শিত হয়েছে, তারা হলেন- স্বামী বিবেকানন্দ, মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসু, জানকীনাথ বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, প্রভাবতী বসু দত্ত, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, কাজী নজরুল ইসলাম, চন্দ্র শেখর আজাদ, যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বাঘা যতীন, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, ভগত সিং, যতীন দাস, অরবিন্দ ঘোষ, মাস্টারদা সূর্যসেন,
ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মী বাঈ, বেণী মাধব দাস, অম্বিকা চক্রবর্তী, আশফাকউল্লা খান, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, বটুকেশ্বর দত্ত, ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, স্বামী সত্যানন্দ পুরী, বীণা দাস, বিনয়কৃষ্ণ বসু, সুধীর গুপ্ত বাদল, দীনেশ চন্দ্র গুপ্ত, দুর্গাবতী দেব, হেমচন্দ্র দাস কানুনগো, মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, কানাইলাল দত্ত, ক্ষুদিরাম বসু, মওলানা ওবায়েদুল্লা সিন্ধি,
নীরা আর্য, প্রফুল্ল চাকী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, শিবরাম রাজগুরু, রামপ্রসাদ বিসমিল, শুকদেব থাপার, উধম সিং ও উল্লাসকর দত্ত।
বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পাহাড়ি বীরপ্রতীকের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, শিল্পী মনিরুজ্জামান।