ডেস্ক রিপোর্টঃঃ
মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার আদিত্যের মহাল এলাকার শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবাশ্রমের সেবায়েতকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে ভেতরে প্রবেশ করে মূর্তি ভাঙচুর, সেবাশ্রমের দানের টাকা ও মহাপ্রভুর মূর্তির পরিধানকৃত স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত জাকির হোসেন টিপুকে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
জাকির হোসেন টিপু গাজিটেকা (আদিত্যের মহাল অংশ) এলাকার মৃত আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে এবং বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী। এব্যাপারে সেবাশ্রমের সভাপতি কৃপাসিন্ধু দত্ত থানায় মামলা করেছেন।
এদিকে সেবাশ্রমের সভাপতির দায়ের করা মামলায় পুলিশ জাকিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করে। পরে জাকির ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে দেওয়া জাকির হোসেন টিপু’র বক্তব্যের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, জাকির একাই মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। এসময় তার সাথে আর কেউ ছিলো না।
অপরদিকে সেবাশ্রমে অনধিকার প্রবেশ করে মূর্তি ভাঙচুর, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরির্শন করেছেন ইউএনও তাহমিনা আক্তার, পৌর প্রশাসক ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আসলাম সারোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. কামরুল হাসান, থানার ওসি মো. আব্দুল কাইয়ুম, প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি অসিত রঞ্জন দাস, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সকাল অনুমান সাতটা চল্লিশ মিনিটের সময় বড়লেখা পৌরসভাস্থ আদিত্যের মহাল শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর সেবাশ্রমের সেবায়েত লীলা রানী দত্ত সেবাশ্রমে পূজাঅর্চনা করছিলেন।
এসময় জাকির হোসেন টিপু কৃষ্ণ কৃষ্ণ নাম জপে সেবাশ্রমে প্রবেশ করতে চান। তখন সেবায়েত তাকে তাকে স্নান করে এসেছেন কিনা জিজ্ঞাসা করে পথ আগলে ধরেন। এসময় জাকির হোসেন টিপু সেবায়েত লীলা রানী দত্তের মাথায় ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে মন্দিরে প্রবেশ করে মন্দিরে থাকা দুটি মহাপ্রভুর মূর্তি ভাঙচুর করে এবং সেবাশ্রমের প্রণামী বাক্সের নগদ টাকা, মূর্তির পরিধানকৃত স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার লুট করে মোটরসাইকেল করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
বড়লেখা থানার ওসি মো. আব্দুল কাইয়ুম বুধবার রাত সাড়ে সাতটায় জানান, ঘটনার খবর পেয়েই তিনিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার ৩ ঘন্টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে কিছু টাকা ও রৌপ্যালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
পরে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।