সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি,এসপি,ওসির নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন,ফ্যাসিবাদের দোসরকে রক্ষায় মরিয়া গোয়াইনঘাট থানার এস আই জহুর লাল

জাফলং থেকে ফিরে ( বিশেষ প্রতিনিধি )::

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সীমান্ত এখন চোরাচালান স্বর্গরাজ্য। জাফলং ইউপির নায়াবস্তি গ্ৰামের সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছু ), লাখের পাড় আসাম পাড়া গ্ৰামের হাফিজ উদ্দিন ও আজির উদ্দিন এর নেতৃত্বে চলছে বেপরোয়া  চোরাচালানের ব্যবসা ।

তারা নিজেদের  থানা পুলিশের লাইনম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়ে চোরাকারবারীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই এলাকার চোরাচালান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় পুলিশের লাইনম্যান খ্যাত সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছু ), হাফিজ উদ্দিন ও আজির উদ্দিনের দাপটের কাছে সাধারণ মানুষ অসহায় তাদের ভয়ে কেউই কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।

আর তাদের রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করছেন গোয়াইনঘাট থানার জাফলংয়ের বিট অফিসার এস আই জহুর লাল দত্ত, পুলিশের লাইনম্যান খ্যাত সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছুর ) সাথে দহরম মহরম থাকায় এলাকার সাধারণ আম জনতা ভয়ে কেউই মুখ খুলতে চান না বলে জানিয়েছেন সচেতন মহল।

আর তাই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সীমান্ত এখন চোরচালানের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত।

বর্তমানে গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্বজাফলং সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করেন সামছুল ও গোয়াইনঘাট থানার জাফলংয়ের বিট অফিসার এস আই জহুর লাল দত্ত।

যার ফলে রেঞ্জ ডিআইজি, বা জেলার এসপির কোন নির্দেশ বা আদেশ কার্যকর হচ্ছেনা গোয়াইনঘাট থানা এলাকার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নে, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব সীমান্তের চোরাচালান বন্ধ করতে জেলার এসপিদের কঠিন নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন।

কিন্তু কোন নির্দেশনাকেই আমলে না নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে উল্টো ফ্যাসিবাদের দোসর সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছুকে ) রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিট অফিসার এস আই জহুর লাল দত্ত।

কালো টাকার লোভে নিজে রাত জেগে কনস্টেবল মাহমুদুলকে দিয়ে চোরচালানের পন্য নিরাপদ গন্তব্যে পৌছে দেন এস আই জহুর লাল দত্ত ।

এস আই জহুর লাল দত্তের এমন বেপরোয়া কর্মকান্ডে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে খোদ গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) সরকার তোফায়েল আহমেদকে ।

বিগত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো প্রায় সব জায়গাতেই রয়ে গেছে ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজত্ব ।

আর এস আই জহুর লাল দত্তের আশীর্বাদে এই ফ্যাসিবাদের দোসর যুবলীগ নেতা সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছু ) এখনো রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে ।

গোয়ানঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চোরাচালান বানিজ্যের মুকুটহীন সম্রাট খ্যাত যুবলীগ নেতা সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছু ) আপাদমস্তক ফ্যাসিবাদের দোসর এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম ।

কারন সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছুর ) রয়েছে সক্রিয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ,এলাকায় কেউ কিছু বললে সামছুল ইসলামের গ্রুপের সদস্যরা ঐ ব্যক্তির উপর দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়,তাই স্থানীয় জনসাধারন ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

সামছুল গ্রুপের সদস্যরা স্থানীয় থানার ওসি ও এসআই জহুর লাল দত্তের নামে চোরাচালানের টাকা উত্তোলন করেন।

এরা প্রতিবস্তা চিনি থেকে ৩ শত টাকা চাঁদা নেয়। এর মধ্যে ২শত টাকা প্রশাসনের জন্য বরাদ্ধ আর ১শত টাকা সামছুলের।

এরকম প্রতিদিন কয়েক হাজার বস্তা চিনি সীমান্ত দিয়ে বাংলদেশে প্রবেশ করছে। প্রতিকার্টুন কিট থেকে ৫শত টাকা, কসমেটিক্স প্রতি কার্টুন থেকে ১ হাজার টাকা করে নিচ্ছে সামছুল ও তার গ্রুপের সদস্যরা।

পূর্ব জাফলং সীমান্তে জিরো পয়েন্ট, সিড়িঘাট পর্যন্ত সামছুলের একক নিয়ন্ত্রনে চলে চোরাচালান।

অনুসন্ধানে জানাযায় বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের প্রভাব খাঁটিয়ে যুবলীগ নেতা সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছু ) চোরাচালান বানিজ্য করে কামিয়েছেন প্রায় শতকোটি টাকা ।

 

সামছুল এর বড় ভাই সেলিম আহমদ ওরফে ( এম.পি সেলিম ), বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ এর সভাপতি পদে নির্বাচন করে, তার মামা সাবু মিয়ার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১ ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হন।

আর এই নির্বাচনে যুবলীগ নেতা সামছুল এর খরছ হয় প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা,

২০২৪ এর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট ৪ আসনের এমপি ইমরান আহমদের পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ১নং সেন্টারের মিছিল,মিটিং,গণসংযোগ থেকে শুরু করে আপ্যায়নের  সম্পূর্ণ খরছ বহন করেন যুবলীগ নেতা  সামছুল ইসলাম ওরফে ( কালা সামছু )।

যুবলীগ নেতা  সামছুল ইসলাম ওরফে ( কালা সামছুর ) ছোট ভাই খলিল ও ছিলেন ৩ নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা ।

গোয়াইনঘাট থানায়  বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের সমাবেশের স্টেজ ভাংচুরের মামলার আসামী ছিলেন কুখ্যাত এই যুবলীগ নেতা  সামছুল ইসলাম ওরফে ( কালা সামছু )

বিগত ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান হলো ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সংগঠিত একটি স্বৈরাচারী সরকারবিরোধী আন্দোলন যেখানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়।

২০২৪ সালের ৫ই জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক ২০১৮ সালের ৪ঠা অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের জারি করা পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণার পরপরই কোটা সংস্কার আন্দোলন হিসেবে এর সূচনা হয় ,এবং ৫ই আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি হয়।

এতোকিছুর পরও গোয়াইনঘাট থানার জাফলংয়ের বিট অফিসার এস আই জহুর লাল দত্তের আশীর্বাদপুষ্ট ফ্যাসিবাদের দোসর যুবলীগ নেতা সামছুল ইসলাম,ওরফে ( কালা সামছুর ) অপ্রতিরোদ্ধ চোরাচালান বানিজ্য ভাবিয়ে তুলছে  এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের ।

এসব বিষয়ে জানতে সামছুল ইসলাম ওরফে ( কালা সামছুর ), ব্যাবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন পুলিশের বর্তমান লাইনের সাথে আমি জড়িত নই, কে বা কারা আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।

তবে লাইন আমার কাছে আসলে আমি আপনাদের সাথে যোগাযোগ করব। 

এবিষয়ে জানতে এসআই জহুর লাল দত্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন ,বিষয়টি নিশ্চিত নয়। চোরাকারবারীরা মিথ্যা কথা বলেছে। 

তবেএসআই জহুর লাল দত্তের সাথে ফ্যাসিবাদের দোসর যুবলীগ নেতা চোরাকারবারী সামছুল ইসলাম ওরফে ( কালা সামছুর ),কথোপকথনের ভিডিও চিত্র বাংলাদেশ প্রতিক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আছে।

আর এলাকাবাসীর প্রশ্ন হলো এসআই জহুর লাল এত কঠোর অবস্থানে থাকলে ওপেন ভারতীয় চিনি কিট কসমেটিক সহ বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রী বাংলাদেশ প্রবেশ করতেছে কি ভাবে।

এবিষয়ে জানতে সার্কেল এস পি সাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে ও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

এসব বিষয় নিয়ে জানতে এ প্রতিবেদকের কথা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমানের সাথে , তিনি জানান আপনারা প্রতিদিনই সংবাদ পাচ্ছেন যে চোরাচালান প্রতিরোধে প্রতিদিন আমরা কাজ করে যাচ্ছি,এবং প্রতিদিনই প্রায় কোটি টাকা মূল্যমানের চোরাচালান পন্য আমরা আটক করছি,

আমাদের ঊর্ধ্বতন সদরের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি’র নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এব্যাপারে জানতে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি অবগত নই,যে বা যারাই পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করছে তাদের আমরা অতিশীঘ্রই আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।এবং পুরো বিষয়টি আমি নিজে খতিয়ে দেখবো।

 

___{ চলমান }___