বাপ্পী চৌধুরীঃঃ
ডাকাত শহীদ। কেউ চেনেন চোর নামে। কেউবা ছিনতাইকারী। সিলেটের অপরাধ জগতে বিচরণ করা এই শহীদ এখন ছিনতাই ও ডাকাত নেটওয়ার্কের গডফাদার।
নিজে এক সময় ছিনতাই করতো। এখন নিজে অপারেশনে নামে না। অপারেশন করে তার সহযোগীরা। নিয়ন্ত্রণ করে শহীদ নিজে।
সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে গ্রেফতার হওয়া কয়েকজন চিহ্নিত ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে শহীদের নাম।
প্রশাসনের সুত্রমতে- মৌলভীবাজার জেলার সনকাঁপন গ্রামের বাসিন্দা মৃত নীল মিয়ার পুত্রই আব্দুস শহীদ।
সে প্রায় ১৫ বছর ধরে সিলেট নগরে বসবাস করছে। দক্ষিণ সুরমা ও টুকেরবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় পূর্বে সে বসবাস করেছে।
প্রথমে বন্দরবাজার এলাকার ছিঁচকে চোর হিসেবে প্রশাসনের তালিকায় যুক্ত হয় শহীদের নাম।
মোবাইলসহ পথচারীদের পকেট মারাই ছিল তার কাজ। এসব অপরাধ করতে গিয়ে কয়েকবার ধরাও পড়ে শহীদ।
একটা সময় বন্দরবাজার এলাকা গোটা সিলেটের অপরাধ রাজ্য নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তার।
বিভিন্ন সড়কে সিএনজি অটোরিকশায় ছিনতাই করতে তার নেতৃত্বে একটা সময় একটি টিম গড়ে ওঠেছিল।
ওই টিমের সদস্যরা দিনের বেলা চুরি, ছিনতাই ও রাতে চালাত ডাকাতি। ঐ সময় একটি ঘটনায় শহীদের বিরুদ্ধে মামলা হলে সে চলে যায় দক্ষিণ সুরমায়। সেখানেও শহীদ তার গ্রুপে বাড়াতে শুরু করে সদস্য।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে নগরীর বন্দরবাজার রংমহল টাওয়ারের কাছ থেকে ডাকাতদের আটক করে পুলিশ। এরপর থানায় জিজ্ঞাসাবাদে তারা গডফাদার হিসেবে জানায় শহীদের নাম।
ঐ দিন কতোয়ালী থানার ওসি আলী মাহমুদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান শুরু করে। অভিযানের সময় সিলেট শহরতলীর জৈনপুর এলাকার একটি বাসা থেকে শহীদকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারের পর থেকে পুলিশ শহীদকে তার অপরাধ নেটওয়ার্ক এবং সহযোগীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
শহীদ তার ৩ সহযোগীর নাম প্রকাশ করে। পুলিশ তাদেরকেও গ্রেফতার করেছে। তৎকালীন কোতোয়ালি থানার ওসি আলী মোহাম্মদ মাহমুদ জানিয়েছিলেন, এক সময় নিজেই ছিনতাই করতো আব্দুস শহীদ। কয়েক বছর ধরে সে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করে। তার নেটওয়ার্কের কে কোথায় যাবে, কী করবে এসব বিষয়ে তদারকি করে সে।
পাশাপাশি কোনো সদস্য গ্রেফতার হলে তাকে ছাড়িয়ে আনার কাজও করতো। ফলে তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের বেশিদিন জেলে থাকতে হতো না।
ওসি আরো জানান, ভয়ঙ্কর অপরাধী শহীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সিলেটের কোতোয়ালিসহ বিভিন্ন থানায় ৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চুরি, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে শহীদ দক্ষিণ সুরমার শহরতলীতে অবস্থান করে পুরো নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করতো।
আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন,প্রায় ১৫ বছর ধরে সে সিলেট নগরে বসবাস করছে। দক্ষিণ সুরমা, টুকেরবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় সে বসবাস করেছে।
প্রথমে বন্দরবাজার এলাকার ছিচকে অপরাধী ছিল শহীদ। মোবাইলসহ পথচারীদের পকেট মারের ধান্ধায় ব্যস্ত থাকতো। এসব অপরাধ করতে গিয়ে এরই মধ্যে কয়েকবার ধরাও পড়ে। এক সময় বন্দরবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
বিভিন্ন রুটে সিএনজি অটোরিকশায় ছিনতাই করতে তার নেতৃত্বে একটি টিম গড়ে ওঠে। ওই টিমের সদস্যরা দিনের বেলা চুরি, ছিনতাই ও রাতে ডাকাতি করতো। ওই সময় মামলাও হয় তার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পর শহীদ দক্ষিণ সুরমায় চলে যায়।
এরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মোবাইল, মহিলাদের ভ্যানেটি ব্যাগ, পকেটের টাকা ছিনতাই করে থাকে।
তৎালীন ওসি জানান, শফিকের নেতৃত্বে থাকা ছিনতাইকারীরা যেসব মোবাইল ছিনতাই করতো সেগুলোর আইএমআই নম্বর তারা প্রযুক্তিগত কৌশলে পরিবর্তন করে ফেলে।
এরপর ছিনতাই করা এসব মোবাইল তারা সিলেটের বাজারে বিক্রি করে।
এখনও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে শহীদের নেতৃত্বে কয়েকটি ছিনতাইকারী গ্রুপই মূলত চালাচ্ছে চুরি, ছিনতাইসহ ডাকাতির মহা-তান্ডব ।
এসমস্ত অপরাধে হাতেনাতে ২০২৪ সালের চলতি মাস এবং গত মাসেও শহীদের হাতে গড়া গ্রুপের একাধিক সদস্যকে আটক করে ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ।
এ ব্যপারে জানতে বর্তমানে কতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মো. জিয়াউল হক এ প্রতিবেদককে জানান আপনি বলায় এখন আমি শহীদের বিষয়ে জানতে পারলাম,আমি এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো ।