সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রহসনের মামলায় নিরীহ গণমাধ্যমকর্মীর কোমরে দড়ি

 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
অপরাজনীতি এবং ক্ষমতার দাপটে সিন্ডিকেটের সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রহসনের মামলায় নিরীহ গণমাধ্যমকর্মীর কোমরে দড়ি। এমনি এক ঘটনা ঘটেছে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এর পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীনের বেলায়। আসামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন, নাগরিকদের প্রতি সদাচরণ প্রদর্শন করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। সেখানে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত অপরাধী হিসেবে আচরণ করা অপমানজনক আচরণ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বিবেচিত হয়।

ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) মধ্যরাতে জয়নালকে তার বাসা থেকে হাতকড়া না পড়িয়ে কোমড়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে তুলে নিয়ে যায় শ্রীমঙ্গৱ থানা পুলিশ। জামিনে থাকা মামলায় কিভাবে যে ওয়ারেন্ট হয়ে গেলো তা জানা ছিল না জয়নালের।
নিজের বাড়ি থেকে স্ব-ইচ্ছায় পুলিশের সাথে যাওয়ার পরেও শ্রীমঙ্গল থানা নামক এক আইডি থেকে লেখা হয়, ‘পলাতক আসামী গ্রেপ্তার।’ অথচ মামলা থেকে অনেক আগেই জামিন নিয়েছিল জয়নাল।

জানা যায়,গত বছরের ১ নভেম্বর-২০২৩ হঠাৎ করেই অভিযোগ আনা হয় শ্রীমঙ্গলের দূর্গানগর এলকার বাসিন্দা মো. জয়নাল আবেদীন (২৮) এর উপর। পুরো এলাকায় রটিয়ে বেড়ায় মাসুক (২৮) এবং তার ভাই ভুয়া ডাক্তার শাহিন(৪০)। বলা হয়, অবৈধ চিনি ব্যবসায় বিনিয়োগ হিসেবে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা দিয়েছেন জয়নাল আবেদিনকে তাও কোন ধরনের কাগজপত্র কিংবা ডকুমেন্টস ছাড়াই। কোন তথ্য প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও নিজেদের পেশীশক্তি এবং টাকার প্রভাব এবং দলীয় প্রভাব খাটিয়ে (শাহিন আওয়ামীলিগের ওয়ার্ড কমিটির প্রভাবশালী নেতা) শ্রীমঙ্গলের আওয়ামী নেতাদের টাকা বিলিয়ে উপজেলা হল রুমে বিচার নিয়ে যান। তথ্য প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন মাহবুব মোর্শেদ নামে একজনের সাথে উনাদের ডাচ বাংলা ব্যাংক এই একাউন্টে ৭০১৭১৩৭২৩১২২১ ভুয়া অ্যাকাউন্ট লেনদেনের তথ্য। যা খতিয়ে জয়নাল আবেদীনকে কোনভাবেই জড়িত পাওয়া যাচ্ছিল না। তবুও সেই বিচারে জোরপূর্বক, ভয়ভীতি দেখিয়ে তার উপর রায় চাপিয়ে দেয় বিগতদিনের আওয়ামী প্রভাবশালীরা। ঐসময়ে তাদের ক্ষমতার কাছে জয়নাল আবেদীন নিজের অসহায়ত্বের পরাজয়ের রায় নিয়ে অপদস্ত হয়ে ফিরে আসেন। পরে তিনি নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে বিচারের কয়েকদিনের মধ্যেই শাহিন-মাসুকদ্বয় কোর্টে মামলা করে সেই মামলায় হাজির হয়ে জামিনও হয় জয়নালের। তদন্ত অনুসারে মামলাটি প্রায় অকেজো হয়ে পরে থাকে দীর্ঘদিন।

যেখানে বড় বড় ডাকাত, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজদের টাকার বিনিময়ে প্রটেক্ট করে এই পুলিশেরাই। সেখানে ভাইরাল টপিক করার জন্য টাকা খেয়ে কমরে দড়ি দেয় নিরীহ সাংবাদিক জামিনে থাকা জয়নালের।
জানা যায়, পেশীশক্তি ও টাকার বিনিময়ে পুনরায় ওয়ারেন্ট করায় বাদী। তাকে হাতকড়া না পড়িয়ে সন্ত্রাসীদের মতো কোমড়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যায় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। যাহা সম্পূর্ণ অপমানজনক আচরণ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বিবেচিত হয়।
পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে জামিন দেয় জর্জকোট।

এবিষয়ে জয়নাল বলেন, আমি এই মিথ্যে মামলায় আরো আগে জামিন নিয়েছি কিন্তু হঠাৎ করে পুলিশ আমাকে কোর্টে চালান দেওয়ার সময় কোমরে দড়ি বেধ ছবি তুলে। তিনি বলেন,প্রশ্ন থেকে যায় আমরা কি আদৌ স্বাধীন হতে পেরেছি? আদৌও পেয়েছি এই পুলিশ বাহীনির সিন্ডিকেট গোষ্ঠীর কাছ থেকে মুক্তি?
যদি হয়ে থাকি তাহলে কেনো এমন হেনস্থা করা হয় আমাকে?কেনো দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই এমন আপমান অপদস্থ? কারা আছে এর পিছনে!