ঈদের পর নতুন করে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এ তালিকায় তেল ও পেঁয়াজের সঙ্গে নাম লিখিয়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের মতো পণ্য।
বাজারে ঈদের পর নতুন করে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আর দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের মতো নিত্যপণ্যের। কিছুটা বেড়েছে আমদানি করা আদার দামও। দেশি ও আমদানি করা রসুনের দামও কিছুটা বাড়তি দেখা গেছে। তবে ঈদের আগে মাছ ও মাংসের যে দাম ছিল, তা থেকে বড় কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। চাল, ডাল, আটা, ময়দা ও চিনি আগের মতোই উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম চার টাকা বাড়ছে। প্রায় একই হারে বাড়ছে বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দামও। তবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে দুই টাকা কমানো হয়েছে। এ ছাড়া সুপার পাম তেলের নতুন দামও নির্ধারণ করা হয়েছে।
এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৬৭ টাকা ও ৫ লিটারের বোতল ৮১৮ টাকা। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৪৯ টাকা। আগে নির্ধারিত না থাকলেও খোলা পাম সুপার তেলের লিটারপ্রতি দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১৩৫ টাকা।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মূলত ভোজ্যতেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা গেছে, মূলত সরবরাহের সংকটে বাজারে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বেড়েছে। মানভেদে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। হালি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহ আগে যে দেশি রসুন প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছিল, গতকাল তা ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ-রসুন বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পর সব বাজার এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। মালামালও আসছে কম। তাতে দাম কিছুটা বেড়েছে।
ঈদের আগে থেকে বাড়ছিল আলুর দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম আরও বেড়েছে। প্রতি কেজিতে ৫ টাকার মতো বেড়ে বর্তমানে খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকার মতো বাড়তি দেখা গেছে আমদানি করা আদার দামে। বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকায়।
রাজধানীর রামপুরা বাজারের আলু বিক্রেতা আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদের পর পাইকারি বাজার থেকে আলু কিনতে প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বাড়তি দিতে হচ্ছে। তাই খুচরায়ও আমরা একই হারে দাম বাড়িয়েছি।’
ঈদের পর মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় নাম লিখিয়েছে ডিমও। প্রতি ডজন ডিমে দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। আর সাদা ডিমের দাম পড়ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।
এদিকে ঈদ শেষে মাছ ও মাংসের দামে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে কোনো কোনো বাজারে মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো কমেছে। গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম পড়েছে প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। আর গরুর মাংস এখনো ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।