নূর মোহাম্মদ সাগর,শ্রীমঙ্গল(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি:
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের ধর্মঘট ১৮তম দিনের মতো চলছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা–বাগানের কাজ বন্ধ থাকলেও শুক্রবার শ্রমিকদের সভা– সমাবেশ বা বিক্ষোভের মতো কোনো কর্মসূচিতে পালন করতে দেখা যায়নি। বাগান মালিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে বসার ঘোষণার পর একধরনের নীরব ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকেরা।
শুক্রবার ২৬আগস্ট শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চা–বাগান ঘুরে শ্রমিকদের তেমন একটা দেখা মেলেনি। বেশির ভাগ শ্রমিকই বাড়িতে রয়েছেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের একত্রিত হয়ে সমাবেশ করার কথা ছিল।
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও পরে ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে আসছেন চা শ্রমিকরা। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও সেটা মানছেন না সাধারণ শ্রমিকেরা। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে বিভক্তি।দির্ঘদিনের নেতারা রয়েছে অনেকটা আড়ালে।চা বাগানের ছাত্রও যুবকদের আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়ে আন্দোলন কে বেগবান করার চেষ্টা করছে।ইতিমধ্যে নতুন করে চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের নামে আরেকটি সংগঠন আবির্ভুত ঘটেছে।ওই সংগঠনে যুবকদের ভূমিকা লক্ষ্য করার মত।অনেকের ধারনা আন্দোলনে দু’গ্রুপে বিভক্ত শ্রমিকরা।আবার অনেকেই বলছে তৃতীয় শক্তির ইঙ্গিতে চলছে একটি পক্ষ।যে যাই বলুক আন্দোলন সফল করতে সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথ অবরোধ করতে দেখা গেছে তাঁদের অধিকাংশকে। দাবি আদায়ে গত কয়েক দিন ধরে বেশ উত্তাল ছিল চা–বাগানগুলো। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার চা–বাগানের মালিকদের সঙ্গে সভা করবেন। শনিবার বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা হবে বলে।
এদিকে চলমান সংকট নিরসনে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলামের আহ্বানে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন বেশ কয়েকজন বাগান পঞ্চায়েত নেতারা। সেখানে জেলা, উপজেলা ও থানা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়।
বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন, সাধারণ চা– শ্রমিকেরা সেটাই মেনে নেবেন। এ জন্য অবশ্যই সবকিছু বিবেচনা করে একটি মানসম্মত মজুরি নির্ধারণ করবেন। আমাদের শেষ ভরসাস্থল থেকে এই আশাটুকু আমরা সবাই করছি।’