ডেস্ক রিপোর্টঃঃ
গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পূর্বপরামর্শ ছাড়াই সম্প্রতি বিভিন্ন পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন দ্য ফরেইন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসি) বাংলাদেশ।
আজ সোমবার সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক টিআই তামিম এবং যোগাযোগ ও স্টেকহোল্ডার বিশেষজ্ঞ সুবর্ণা মোস্তাফা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূসক বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এফআইসিসি বাংলাদেশের মোট এফডিআইয়ের ৯০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে, যার মধ্যে তামাক, টেলিকম, জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ উচ্চ আয়ের খাতগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; যা সম্মিলিতভাবে মোট অভ্যন্তরীণ রাজস্বের প্রায় ৩০ শতাংশ অবদান রাখে।
সম্প্রতি ভ্যাট, এসডি ও অন্যান্য কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি গ্রাহকদের ওপর প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে এবং দেশে ব্যবসার ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে। এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করতে পারে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
শিল্পগুলো ক্ষতি কমিয়ে আনতে চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ গ্রাহকেরা সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধির সম্মুখীন হবেন। ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে খুচরা ক্রয় খরচ ২.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে গ্রাহকেরা পণ্যের ব্যবহার কমাতে বাধ্য হবে। যার কারণে সরকারের কর বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানোর যে কৌশল, তা কার্যকর হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এফআইসিসি সব সময় একটি উপযুক্ত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করে এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যুক্তিসংগত, টেকসই রাজস্ব ও নিয়ন্ত্রক নীতিগুলো তৈরিতে সরকারকে সহযোগিতা করেছে। এবার কোনো আলোচনা ছাড়াই সরকারের এ সিদ্ধান্তে এফআইসিসি উদ্বিগ্ন।
বিদেশি বিনিয়োগকারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শীর্ষস্থানীয় চেম্বার। এটি ১৯৬৩ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে অগ্রণী হিসেবে কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
একটি অগ্রণী চেম্বার হিসেবে এফআইসিসি বিশ্বের ৩৫টি দেশের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশের ২১টি খাতে।
বৃহস্পতিবার রাতে দুটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে শতাধিক পণ্য ও সেবায়। মূলত আমদানি, উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর, সম্পূরক ও আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার।
অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে হুট করে শতাধিক পণ্য ও সেবায় মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি বন্ধ হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক দল ছাড়াও অর্থনীতিবিদ ও ভোক্তারা সরকারের এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন।