শ্রীমঙ্গলে আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা শিল্পাঞ্চলে বইছে আনন্দের বন্যা

নূর মোহাম্মদ সাগর, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এবার আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা শিল্পাঞ্চলে বইছে আনন্দের বন্যা।

গত দুই থেকে তিনদিন ধরে সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে।

আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চা বাগানগুলোতে শুরু হয়েছে চা উৎপাদন।

এ বছর প্রায় ২০দিন আগে থেকেই বিভিন্ন চা বাগানে শুরু হয়েছে পাতা চয়ন।

এ ধারা অব্যাহত থাকলে গত বছরের ন্যায় এ বছরও উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চা সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিবছর মার্চের শেষ দিকে নিজস্ব সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন চা বাগানে উৎপাদন শুরু হলেও এ বছর প্রাকৃতিক ভাবে মার্চ মাসে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে শুরু হয়েছে চায়ের উৎপাদন।

আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় চলতি মৌসুমে কাংঙ্খিত চায়ের জন্য সুফল বয়ে আনবে বলে চা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

টিপিং (আগাছাঁটাই) করা চা গাছে দ্রুত গজাতে শুরু করবে কুঁড়ি।

এই বৃষ্টিপাতের কারণে চা সংশ্লিষ্টরা মহাখুশি।
শ্রীমঙ্গলে গত (১৯ মার্চ) রোববার সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত তিন দফায় ১৯.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানাযায়,এবার ২০২৩ সালে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ১০২ মিলিয়ন কেজির বেশি ধরা হয়েছে। যা ২০২২ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি।বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ বাগানের কৃত্রিম সেচ সুবিধার অভাব রয়েছে।সিলেটে চা বাগানগুলোর সবকটিই পাহাড়ি ভ’মিতে,ফলে বাগানের জমিতে গভীর নলকুপ স্থাপন করাও সম্ভব হয় না।

ফলে চা উৎপাদের জন্য এই সময়টাতে বৃষ্টি খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। চলতি মৌসুমে কাংঙ্খিত বৃষ্টিপাত চায়ের জন্য সুফল বয়ে আনবে। ২০২৩ সালের এই মৌসুমে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ১০২ মিলিয়ন কেজির বেশি ধরা হয়েছে।

মার্চের এই বৃষ্টিপাত আমাদের চা সংশ্লিষ্টদের কাছে আশির্বাদ স্বরূপ। টিপিং এর কাজটি হবে যথাযথ। ফলে চায়ের গুণগত মানও অক্ষুন্ন থাকবে।কাংঙ্খিত ধারায় বৃষ্টিপাত হলে চা উৎপাদনে এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আমি আশাবাদী।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ধারাবাহিকতায় ৪ দিন বৃষ্টি হযেছে। যা তাদের খুবই উপকার করেছে।

বৃষ্টি হওয়ায় এখন চা গাছে দ্রুত নতুন কুঁড়ি চলে আসবে, টিপিং দ্রুত হবে।

আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষ্যে মাত্রার ওপরে চা উৎপাদন হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার আগামি ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে।

যা দেশের চাহিদা পূরণ করবে ১৩০ মিলিয়ন কেজি চা।বাকি ১০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *