লাউয়াছড়ায় ট্রেন থামিয়ে হরিণ হত্যা : ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা আদালতের
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ট্রেন থামিয়ে হরিণ জবাইয়ের ঘটনা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন মৌলভীবাজার বন আদালত। সোমবার আদালত এ নির্দেশনা দেন।
গত বুধবার সকালে লাউয়াছড়ায় ট্রেন থামিয়ে হরিণ হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবি ও ভিডিওদেখে রেলওয়ের দুই কর্মচারীর পরিচয় সনাক্ত করা হয়। তবে তাদের আটকে এখনো রেল পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই। এনিয়ে পরিবেশকর্মীসহ স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে আহত মায়া হরিণ জবাই করে ট্রেনে তুলে নেন কয়েকজন ব্যক্তি। পরে যাত্রীদের ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে যাদের দা হাতে ও জবাইকৃত হরিণ বহনকারী ব্যক্তিদের ছবি দেখে তারা রেলওয়ের কর্মচারী বলে নিশ্চিত হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ট্রেন থামিয়ে হরিণ জবাই ঘটনায় ট্রেনের চালকও দায়ী বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে ধারালো অস্ত্র (দা) হাতে মুখে দাঁড়িওয়ালা সাদা শার্ট পড়া লোকটি রেলওয়ের লাইন মেকানিক এনামুল হক সোহেল। জবাইকৃত হরিণকে ঝুলিয়ে নেয়া অপর এক ব্যক্তি গলায় স্কার্প পড়া ট্রেনের সহকারী চালক। তবে তার নাম জানা যায় নি। সহযোগী অন্যরা ট্রেনের ফায়ারম্যান ও রেলকর্মী ছিলেন।
পরিবেশকর্মী সালেহ সোহেল, নূরুল মোহাইমীন মিল্টনসহ স্থানীয়রা জানান, হরিণ জবাইয়ের তথ্য ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে ঘটনার সাথে জড়িত কারা? এরপরও রেলওয়ে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। অথচ কোন কারণ ছাড়াই হরিণ জবাই করার জন্য বনের মধ্যে ট্রেন দাঁড় করা অবৈধ। এ বিষয়ে দ্রæত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন বলে বলে তারা মন্তব্য করেন।
হরিণ হত্যাকান্ডে রেলওয়ে পুলিশের তৎপরতা ধীরগতি দাবি করে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, ‘ সোমবার মৌলভীবাজারের বিজ্ঞ বন আদালত তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানা পুলিশের। ছবি ও ভিডিওতে যা দেখা যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট। তদন্তের দায়িত্ব অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। এখন রেলওয়ে পুলিশ কি ভূমিকা নিচ্ছে তা-ই দেখার বিষয়। তারপরও রেলওয়ে পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নিলেও, আমরা আমাদের মতো সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ওসি সাফিউল ইসলাম পাটোয়ারীকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।