রাজনগরে সিএনজি চালক হত্যার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী গ্রেপ্তার

রাজনগর প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের রাজনগরে গলাকাটা অটোরিকসা চালকের মৃতদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অটোরিকসা চালকের হত্যাকারী রজব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের নাম শাবউদ্দিন। সে কুলাউড়া উপজেলার হিঙ্গাজিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। পেশায় অটোরিকসা চালক। গত ২৭ মে অটোরিকসা চালক শাহাব উদ্দিনের অটোরিকসা ছিন্তাই করার জন্য তাকে গলা কেটে হত্যা করে রজব আলী। নিহত শাহাব উদ্দিনের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে রাজনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শাহাব উদ্দিনের স্ত্রী অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলে, তদন্তকারী টিম অভিযান চালিয়ে শাহাব উদ্দিনের হত্যাকারী রজব আলীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রজব আলী জানায়, শাহা উদ্দিনের অটোরিকসাটি ছিন্তাই করতে তাকে গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার ৭ জুন বিকেলে কুলাউড়ার মিশন বাউন্ডারী বাড়ির রজব আলীর ভাড়া বাসা থেকে অটোরিকসা বিক্রির ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

কুলাউড়া থানা সুত্রে জানা যায়, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজনগর উপজেলার হাজীনগর চা বাগান থেকে অটোরিকসা চালক শাহাবউদ্দিনের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শাহাবউদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শাহাব উদ্দিন হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে তদন্তকারী অফিসার এসআই মো: সওকত মাসুদ ভূইয়া তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি রাজনগর থানার ফোন নাম্বারটি স্থানীয়দের দিয়ে এ ঘটনার বিষয়ে কেউ কিছু জানতে পারলে থানায় জানাতে অনুরোধ করেন। পরে ২৯ মে এজন রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভুষন রায়কে ফোন দিয়ে জানায়, ঘটনার দিন গভীর রাতে ব্রাহ্মনবাজার মিশন বাউন্ডারী বাড়ীর ভাড়াটিয়া রজব আলীকে রক্তমাখা জামা কাপড় নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখেছেন। এমন খবরের ভিত্তিতে তদন্তকারী অফিসার রজব আলীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার নম্বরের সিডিআর বিশ্লেষন করে ২৯ মে রাত ১০টার দিকে রজব আলীকে আটক করেন। এসময় রজব আলীর হাতের কনিষ্ট আঙুলে কাটা চিহৃ দেখতে পায় পুলিশ। রজব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার আচরণ সন্দেহ জনক মনে হলে শাহাব উদ্দিন হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৫ জুন গ্রেপ্তারকৃত রজব আলীকে বিজ্ঞ আদালতে তোলা হলে রজব আলী পুলিশকে জানায়, অটোরিকসা ছিন্তাই করতে সে শাহাব উদ্দিনকে হত্যা করে তার অটোরিকসাটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ছিন্তাইকৃত অটোরিকসাটি মৌলভীবাজার ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী সোহেল মিয়ার নিকট ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। আদালতকে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বাঙ্গারি ব্যবসায়ী জিয়াউল হক সুহেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় বাঙ্গারি ব্যবসায়ী সোহেল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, রজব আলীর কাছ থেকে ক্রয় করা রিকসাটি ভেঙে এর যন্ত্রাংশ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে দেয়। পরে বাঙ্গারি ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তি অটোরিকসাটির ২টি ব্যাটারিসহ কিছু যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে পুলিশ।