যুবলীগ-যুবদলে মিলেমিশে একাকার গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাচালান

বিশেষ প্রতিবেদকঃঃ

সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাকারবারী ও বখরাবাজদের স্বর্গরাজ্য। সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে অবাঁধে আসছে ভারতীয় গরু মহিষ, চা-পাতা, চিনি, পান মসলা প্রভৃতি পণ্যের চালান।

 

 

বিপরীতে যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে মূল্যবান পণ্য সামগ্রী , চায়না রসুন ও বৈদেশিক মূদ্রা। দেশীয় উৎপাদনে উন্নতমানের চা-পাতা ক্ষতির সম্মুখীন। এমন অভিযোগ স্থানীয় জনগনের। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।,

বর্তমানে যুবলীগ-যুবদলে মিলেমিশে একাকার গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাচালান,

গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাচালান সিন্ডিকেটের মূলহুতা আগে ছিলেন আব্দুল্লাহ মিয়া। বিগত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো প্রায় সব জায়গাতেই রয়ে গেছে ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজত্ব ।

আর এই ফ্যাসিবাদের দোসর চোরাকারবারিদের প্রধান ছিলেন আব্দুল্লাহ মিয়া , যিনি ছিলেন সাবেক প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট ৪ আসনের (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ,কোম্পানিগঞ্জ) এমপি ইমরান আহমদের পদলেহী এবং গোয়াইনঘাট থানার সাবেক ( ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ) ওসি দেলোয়ার হোসেনের ল্যাইনম্যান।

চোরাকারবারিদের প্রধান আব্দুল্লাহ মিয়ার বিষয়টি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আসে তৎকালীন সিলেটের এসপি নুরে আলম মিনার কাছে। তিনি আব্দুল্লাহ-কে গ্রেফতারে নির্দেশও দিয়ে ছিলেন সেই সময়। কিন্তু আব্দুল্লাহকে সে সময় বাঁচিয়ে দিয়ে ছিলেন ওসি দেলোয়ার।

চোরাকারবারিদের প্রধান আব্দুল্লাহ মিয়ার নির্দেশে তৎকালীন সময়ে বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা কর্মীদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়েছেন গোয়াইনঘাট থানার সাবেক ( ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ) ওসি দেলোয়ার হোসেন।

গোয়াইনঘাট থানার সাবেক ( ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ) ওসি দেলোয়ার হোসেনের বদলির পর তার স্থলাভিষিক্ত হন তৎকালীন গোয়াইনঘাট থানার নবাগত ( ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ) ওসি নজরুল ইসলাম।

নবাগত ওসি নজরুল ইসলাম যোগদানের পর আব্দুল্লাহ হাতে আবার চলে যায় সীমান্ত এলাকার লাইন। ফলে সে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে ।

এরই জেরধরে বিগত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে কিছুদিন আত্মগোপনে চলেযান আব্দুল্লাহ মিয়া।

পরবর্তীতে আবার মাঠে ফিরে গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের লুনি গ্ৰামের বাসিন্দা যুবদল নেতা পরিচয় দানকারী কামরুল আহমেদ এর সাথে জোট বেঁধে ভারতীয় চোরাচালান ব্যবসা ও স্থানীয় প্রশাসনের লাইনম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়ে চোরাকারবারীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে ।

সাবেক প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট ৪ আসনের এমপি ইমরান আহমদের দাপট খাঠিয়ে অবৈধ ভারতীয় পন্যের ব্যাবসা করে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

বিগত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদের দোসর আব্দুল্লাহ মিয়া এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

আগের মতো এখনো আব্দুল্লাহ মিয়ার গভীর সখ্যতা রয়েছে স্থানীয় প্রশাসেন সাথে ।

 

 

বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আব্দুল্লাহ মিয়ার সাথে পুলিশের এতো সখ্যতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল?

জেলা পুলিশ সুপার থেকে গোয়াইনঘাট থানার সকল কর্মকর্তার সাথে তার ছিল গভীর সখ্যতা। তার ফেসবুক ওয়ালে ছিল সাবেক প্রবাসী কল্যাণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট ৪ আসনের এমপি ইমরান আহমদসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্তা ব্যাক্তিদের হরেক রকম ছবির বাহার।

কিন্তু বিগত ৫ই আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে তার ফেসবুক প্রোফাইল পরিবর্তন হলেও যুবদল নেতা পরিচয় দানকারী পদ পদবীহীন কামরুল আহমেদ বদৌলতে এখনো স্থানীয় প্রশাসেন সাথে সখ্যতার কোন কমতি নেই আব্দুল্লাহ ও কামরুলের ।

বর্তমানে সেই আগের মতোই চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছেন যুবলীগের আব্দুল্লাহ মিয়া ও যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী কামরুল আহমেদ

জনপ্রতি প্রত্যেক চোরাকারবারীদের কাছ থেকে যুবলীগের আব্দুল্লাহ মিয়া ও যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী কামরুল আহমেদ দৈনিক চাঁদা আদায় করে থাকেন।

বিনিময়ে সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে অবাঁধে আসছে ভারতীয় গরু মহিষ, চা-পাতা, চিনি, পান মসলা সহ ভারতীয় পণ্যের চালান।

যার বিপরিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে মূল্যবান খাদ্য পণ্য সামগ্রী , চায়না রসুন, ও বৈদেশিক মূদ্রা।

শুধু মাত্র আব্দুল্লাহ ও কামরুলের হাত ধরে বাংলাদেশে প্রতিরাতে প্রবেশ করছে ১০/১২ টি চা পাতা ভর্তি ট্রাক। ফলে দেশীয় উৎপাদনে উন্নত মানের চা-পাতা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, এমন অভিযোগ স্থানীয় জনগনের। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

সীমান্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশে গো-মাংস ও চিনির দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গোয়াইনঘাট সীমান্ত হয়ে উঠেছে গরু, চা-পাতা ও চিনি চোরচালানের ট্রানজিট পয়েন্ট। সক্রিয় হয়ে ওঠেছে চোরাকারবারি ও বখরা সিন্ডিকেট।

 

অন্যদিকে চোরচালান নির্বিঘ্নে করার জন্য গোয়াইনঘাটে কামরুল- আব্দুল্লাহ এর বখরা আদায় সিন্ডিকেটে রয়েছেন ৮ লাইনম্যান। তারা চোরকারবরিদের কাছ থেকে ভারতীয় গরু প্রতি ১হাজার টাকা করে বখরা আদায় করে থাকেন। চোরাইপথে আনা চিনির বস্তা প্রতি আদায় করেন ২শ’ টাকা করে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে আব্দুল্লাহ মিয়ার ব্যবহৃত মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি স্বীকারোক্তি দেন হ্যাঁ আমিই লাইন চালাচ্ছিলাম কিন্তু বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারনে এসব কামরুল দেখাশুনা করছে,আমি বাড়িতে রেষ্টে আছি ।

এব্যাপারে যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী কামরুল আহমেদের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি অকপটে বলেন হ্যাঁ এখন আমি লাইন চালাচ্ছি।

এসব নিউজ করে কোন লাভ নেই সার্কেল এএসপি ও আমাকে চেনেন,আমরা যুদ্ধকরে এ দেশ স্বাধীন করেছি । আমি এ ইউনিয়নের যুবদল নেতা ।

এব্যাপারে জানতে গোয়াইনঘাট- কোম্পানীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাইদুর ইসলামের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি ।

এসব বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) সরকার তোফায়েল আহমেদের মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কামরুল ও আব্দুল্লাহ কে ? তাদের আমি চিনি না,

আপনি তথ্য দেয়ায় এব্যপারে আমি অবহিত হলাম,তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যাবস্থা আমি অবশ্যই নেব ।অপরাধী যেই বা যারাই হোক তারা ছাড় পাবে না ।

এসব বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট থানার ১১ নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের বিট অফিসার এস.আই উৎসব কর্মকারের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি ।