মিতালী এক্সপ্রেস ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির ট্রেনের বিস্তারিত

বাংলাদেশ প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

আগামী পহেলা জুন থেকে চালু হবে ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) রুটের নতুন আন্তদেশীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস। ২০২১ সালে ২৭ ই মার্চ উদ্বোধন করা হয়েছিলো এ ট্রেন, তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিয়মিত যাত্রী নিয়ে চলাচল করেনি।
১৯৬৫ সালের আগে ঢাকা-শিলিগুড়ির মধ্যে ট্রেন চলাচল ছিলো, কিন্তু পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৫৮ বছর পর আবার এ রুটে নিয়মিত চলবে ট্রেন।

তবে কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম যেভাবে ঢাকা-দার্জিলিং রুটে দেখাচ্ছে এ ট্রেন, বাস্তবে তা নয়। এ ট্রেনের যাবতীয় তথ্য নিয়ে এ আর্টিকেল। বাংলাদেশে ভারতের মধ্যে চলচালকারী তৃতীয় ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস। এর আগে ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস ও খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করে। মিতালী ছাড়া বাকি দুটো ট্রেন ২৯ মে ২০২২ থেকে নিয়মিত চলাচল করবে। ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ির দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার, যার মাত্র ৬৯ কিলোমিটার ভারতের মধ্যে। এ ট্রেনের রুট হচ্ছে:  ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট -চিলাহাটি-হলিদাবাড়ী-নিউ জলপাইগুড়ি।

সময়সূচী: মিতালী এক্সপ্রেস (ট্রেন নাম্বার ৩১৩১/৩১৩২)। পোর্ট ভিসায় উল্লেখ থাকতে হবে: বাই ট্রেন জলপাইগুড়ি।

নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে প্রতি রবিবার ও বুধাবার

ঢাকা ক্যান্টমেন্ট থেকে ছাড়বে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছাড়বে ভারতীয় সময় সকাল ১১:৪৫ মিনিটে। ঢাকা ক্যান্টমেন্ট পৌছাবে রাত ১০:৩০ মিনিটে।

অপরদিকে ঢাকা ক্যান্টমেন্ট থেকে ছেড়ে যাবে রাত ৯:৫০ মিনিটে আর নিউ জলপাইগুড়ি পৌছাবে সকাল ৭:১৫ মিনিটে।

ভাড়া: মিতালী এক্সপ্রেসে এসি বার্থ/সিট চারটি ও এসি চেয়ার চারটি কম্পার্টমেন্ট থাকবে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি বার্থ ৫,২৫৫ টাকা, এসি সিট ৩,৪২০ টাকা, এসি চেয়ার ২,৭৮০ টাকা। এ ভাড়ার মধ্যে ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের টিকেট ৫০% কম। যাত্রার ৩০ দিন আগ পর্যন্ত টিকেট অগ্রীম কাটা যাবে। একজন যাত্রী বিনা ভাড়ায় সর্বোচ্চ ৩৫ কেজি মালামাল বহন করতে পারবেন।

টিকেটের প্রাপ্তীস্থান: বাংলাদেশে ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কাটা যাবে মৈত্রী এক্সপ্রেসের টিকেট।  অপরদিকে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ও কলকাতার ফেয়ারলী প্যালেস থেকে টিকেট কাটা যাবে।

অনেক পোস্টে দার্জিলিং জুড়ে দিচ্ছে এ ট্রেনের নামের সাথে। বাস্তবে জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে প্রথমে শিলিগুড়ির এসএনটিতে এসে দার্জিলিংয়ের জন্য জিপ ভাড়া করতে হবে এবং তাতে খরচ পড়বে ২৫০০-৩৫০০ রুপি। তবে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের ট্রেন চলাচল করে। আপনি চাইলে নিউ জলপাইগুড়ি পৌছানোর তিন ঘন্টা পরে ট্রেনে করে দার্জিলিং যেতে পারবেন। সমস্যা হচ্ছে সকাল ১০ টায় ছেড়ে যাওয়া  এ ট্রেন দার্জিলিং পৌছাবে বিকাল ৫:৩০ টায়। তার চেয়ে শিলিগুড়ি থেকে জিপে গেলে ৩ ঘন্টার মধ্যে পৌছে যাবেন দার্জিলিং।

এই ট্রেন চলাচলকে ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহের বড় কারণ দার্জিলিং, সান্দাকফু বা সিকিম ভ্রমণ। বাংলাদেশের মানুষের অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে এ কয়টি স্থান। বর্তমানে শ্যামলী পরিবহনের ঢাকা-শিলিগুড়ি বাস সার্ভিস চালু থাকলেও সেটা খুব একটা সুবিধার না। সন্ধ্যা ৭:৩০ এ ঢাকা থেকে ছেড়ে বুড়িমারী সীমান্তে পৌছায় সকাল ৮ টার দিকে। তারপর বর্ডার পার হয়ে চেংরাবান্দা থেকে শ্যামলীর অন্য একটি বাসে যেতে হয় শিলিগুড়ি। প্রায় পৌছাতে দুপুর ২/৩ টা বেজে যায়। আর বর্ডারে হয়রানিতো আছেই।

এসব কিছু বিবেচনায় ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির ট্রেন বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য দারুণ সংবাদই বটে। কিন্তু ভারতীয় পর্যটকদের কোন উপকারে আসবে বলে মনে হচ্ছেনা। এর প্রধান কারণ ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা। শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই, তাই কাউকে বাংলাদেশে আসতে হলে ভিসা নিতে হবে কলকাতা থেকে! এসব কারণে  এই ট্রেন দিয়ে শুধু বাংলাদেশি পর্যটকরাই ভারতের কিছু অঞ্চলে যাওয়ার সুবিধা পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *