শাহরিয়ার শাকিল,বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় হঠাৎ করে বেড়ে গেছে চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগী। প্রতিবছর গ্রীষ্মে এ ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগের দেখা মিললেও এবার শরতে বেড়েছে এর প্রকোপ। বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন রোগী আসছেন চিকিৎসা নিতে।
চক্ষু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারো চোখে তাকালেই চোখ উঠা রোগ হয় না। তবে এ রোগ ছোঁয়াচে, এটির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো কিছু না ছোঁয়া ও তাদের ব্যবহারের জিনিস আলাদা করতে হবে। তবে করোনা পরবর্তী সময়ে যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালোভাবে তৈরি হয়নি, তারা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, চোখ উঠাকে কনজাংটিভাইটিস বা রেড/পিংক আই বলে। অর্থাৎ কনজাংটিভা নামক চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ উঠা রোগ বলা হয়। চোখ উঠার মূল কারণ ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। আক্রান্ত কারও চোখে তাকালেই কারোর চোখ উঠে না। কারও কারও চোখ ওঠা হয়তো তিনদিনে ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকের তিন সপ্তাহও লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করে কাকে কোন ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার ওপর।
এদিকে বড়লেখায় এ রোগের প্রকোপ বাড়ায় বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ছাত্রছাত্রীদের সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে আসতে নিষেধ করেছে। বড়লেখা উপজেলাভিত্তিক বিভিন্ন ফেসবুক পেইজে চোখ উঠা রোগীরা পরামর্শ চেয়ে পোস্ট দিচ্ছেন।
স্থানীয় একটি সরকারি মাদ্রাসার প্রভাষক চোখ ওঠা রোগ দেখা দিলে তিনি দায়িত্বশীলদের অনুমতি নিয়ে মাদ্রাসা ত্যাগ করেন। যাতে এ রোগ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে না ছড়ায় সেজন্য তিনি ছুটি নেন।
বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রত্নদ্বীপ বিশ্বাস বলেন, এই রোগটি এখন সারা দেশে রয়েছে। আতংক বা দুঃচিন্তার কিছু নেই। এটা এক সময় কমে আসবে। যারা আক্রান্ত হয়েছে তারা একটু সচেতন থাকলেই রোগটি থেকে সেরে উঠবেন।
১০ নং দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল আলম রানা বলেন, চোখে ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে চোখ ওঠে। এই রোগে আক্রান্ত হলে ভয়ের খুব একটা কারণ নেই। সাধারণত ৫-৭ দিনের মধ্যে এটা নিজে নিজেই সেরে ওঠে। এক্ষেত্রে যদি জ্বর আসে তাহলে প্যারাসিটামল এবং চুলকালে এলার্জির যেকোনো ঔষধ সাথে খেতে হবে এবং আরও কিছুপরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন হতে পারে।
তাই সেসব রোগীকে অবশ্যই চক্ষু বিশেষজ্ঞ সার্জন দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।