দেশে প্রথমবারের মত আট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে দেয়া হবে ‘জাতীয় চা পুরস্কার’

মোঃ কাওছার ইকবাল, মৌলভীবাজার।

চা শিল্পের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান ও অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে জাতীয় চা দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে এই প্রথমবারের মত আট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে দেয়া হবে ‘জাতীয় চা পুরস্কার’।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মন্ত্রী বলেন, দেশের চা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মত এই ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান করা হবে। আট ক্যাটাগরিতে সাতটি প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এবং একটি ব্যক্তি পর্যায়ে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।

সোমবার (২২ মে) জাতীয় চা দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১ম ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদানের লক্ষে যাচাই-বাছাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

যে আটটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হবে সেগুলো হল- (১) একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান (২) সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান (৩) শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক (৪) শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী (৫) শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান (৬) বৈচিত্রময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি (৭) দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি (৮) শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (ব্যক্তি/শ্রমিক)।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, চা শিল্পের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান ও অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে জাতীয় চা পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যানের পদ অলংকৃত করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের চা শিল্পে অসামান্য অবদান রাখেন। চা শিল্পে জাতির পিতার অবদানকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ৪ জুন জাতীয় চা দিবস পালন করা হয়।

তিনি আরো বলেন, দেশের চা শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এবং এর অংশীজন হিসেবে চা বাগান মালিক, চা উৎপাদনকারী এবং প্যাকেজিং বিপণন কোম্পানিসহ চা শিল্পে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংগঠন তাদের স্ব স্ব কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন। এসব প্রতিষ্ঠান/সংগঠন ও ব্যক্তির অবদানকে স্বীকৃতি দিতেই জাতীয় চা পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে চা শিল্প আজ টেকসই ও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। গুণগতমানের চা উৎপাদন বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
চায়ের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বিপণন প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং সর্বোপরি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চায়ের নতুন বাজার সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ চা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা বাগান মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে এবছর জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন করার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঐ অনুষ্ঠানে ‘জাতীয় চা পুরস্কার’ বিজয়ীদের হাতে বাণিজ্যমন্ত্রী পুরস্কার তুলে দিবেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *