আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস আজ

ডেস্ক রিপোর্টঃ

আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। প্রতি বছর ৯ আগস্ট পালন করা হয় এই দিবসটি। বিশ্বজুড়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার জন্য এই বিশেষ দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের অবদান ও অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ।

প্রতি বছর দিবসটি পালন করার জন্য একটি প্রতিপাদ্য বিষয় বেছে নেয় জাতিসংঘ। এ বছর আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘ঐতিহ্যগত জ্ঞান সংরক্ষণ ও বিকাশে আদিবাসী নারীদের ভূমিকা’।

এটি নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নারীরা যে ভূমিকা পালন করেন, তার ওপর জোর দেয়।

১৯৮২ সালের ৯ আগস্ট জেনেভায় জাতিসংঘের বৈঠকের পর জাতিসংঘ কর্তৃক আদিবাসী জনসংখ্যা সংক্রান্ত প্রথম ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়। বৈঠকে জাতিসংঘের সংস্থাকে আদিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বের ৭০টি দেশে ৩০ কোটি আদিবাসী বাস করে, যাদের অধিকাংশই অধিকারবঞ্চিত। অনেক দেশে আদিবাসীরা স্বীকৃতিই পায়নি। কোনো দেশে উপজাতি, কোনো দেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলে অভিহিত করা হয় তাদের।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কাজ করাই এর প্রধান লক্ষ্য ছিল। ১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতি বছর ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রতি বছর জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিপাদ্য বিষয়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বার্ষিক প্রকল্প এবং বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। বাংলাদেশ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের আদিবাসীদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, সম্প্রদায় উপজাতি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও বাংলাদেশের আদিবাসীরা নিজেদের আদিবাসী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। জাতিসংঘ তাদের দাপ্তরিক কাজে ইন্ডিজিনাস অর্থাৎ আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করে থাকে।

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও,গাইবান্ধা, বগুড়া।
সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলা গুলিতে সাঁওতাল, শিং (গঞ্জু), ওঁরাও, মুন্ডারি, বেদিয়া মাহাতো, রাজোয়ার, কর্মকার, তেলী,তুরী, ভুইমালী, কোল, কড়া, রাজবংশী, মাল পাহাড়িয়া, মাহালী ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠি বসবাস করছে।

অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, মুরং বা ম্রো, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া,বম, খুমী ও চাক জনগোষ্ঠি বসবাস করছে। বিশ্বের তাবৎ আদিবাসী জনগোষ্ঠির পাশাপাশি বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও বহুত্ববাদে বিশ্বাসী মানুষ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *