একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশটাকে জিম্মি করে রেখেছে: সেমিনারে ভোক্তার ডিজি

বাংলাদেশ প্রতিক্ষণঃ

সম্প্রতি কিছু অভিযানে হাজার হাজার লিটার মজুদকৃত সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান। ভোগ্য পণ্য মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশটাকে জিম্মি করে রেখেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান। যেখানেই অভিযান চালাচ্ছি সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি। হাত দিলেই অনিয়ম।’

মঙ্গলবার (২৪ মে) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘ভোক্তা অধিকার সচেতনতা বিষয়ক সেমিনারে’ প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কনশাস কনজ্যুমার সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসক্লাব, সাংবাদিক সমিতি, কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশের সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীসহ তিন শতাধিক অংশ নেন।

আরও পড়ুন
ফরিদপুরে বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল জব্দ
মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান আরো বলেন, ‘দেশে ভোক্তারা ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতারিত হচ্ছে। বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তির সময়ই কয়েক মাসের বেতন আগাম নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বই, খাতা, কলম, পোশাক স্কুল থেকে বেশি দামে কিনতে বাধ্য করে সবচেয়ে কম মানের জিনিসপত্র দেয়া হচ্ছে। ভোক্তাদের অনেকেই তাদের অধিকারের বিষয়টি জানেন না। ভোক্তারা বাজারে যেসব দ্রব্য কিনছেন তা সঠিক মানে ও মূল্য পাচ্ছেন কিনা এসব বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করতে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। পাইকারি বিক্রির ক্ষেত্রে ২০% এবং খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে কেউই ৩০% এর বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবে না। ভোক্তা অধিকার আইনে কেউ সঠিক অভিযোগ করতে পারলে জরিমানাকৃত অর্থের ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে নগদ প্রদান করার বিধান রয়েছে।’

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোতে অধিকাংশ পণ্য ক্রয়ের পর সে দ্রব্যটি ক্রেতার ভালো না লাগলে একটা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফেরত দিতে পারে। ক্রেতা চাইলে দ্রব্য ক্রয়ের পুরো অর্থও ফেরত পান। আমাদের দেশে এই বিষয়টি এখনো পুরোপুরি প্রচলন পায়নি। দেশে বিক্রেতারা ভাবেন দ্রব্য বিক্রি করতে পারলাম তো বেঁচে গেলাম। এই বিষয়ে আইনের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার।’

সভাপতির বক্তব্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘দ্রব্য কেনাকাটার ব্যাপারে ভোক্তারা এখন অনেক সচেতন। ভোক্তাদের সচেতনতা আরো বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের প্রচারণা চালু রয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ একটি সমাজ বিপ্লব। যুদ্ধের মাধ্যমে রাতারাতি কোন কিছু পরিবর্তন হলেও সমাজ বিপ্লব একদিনে হয় না। স্তরে স্তরে তার পরিবর্তন দরকার। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

সেমিনারে কনশাস কনজ্যুমার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *