সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তে এস আই উৎসবের সহযোগিতায় ‘উৎসবমুখর’ চোরাচালান বানিজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের, হাজীপুর, প্রতাপপুর বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে দেদারসে আসছে ভারতীয় চোরাই পণ্য।

এলাকাবাসী সূত্রে জানায় যায়, গোয়াইনঘাটের থানা পুলিশের এস আই উৎসব কর্মকারের সহযোগিতায় ‘উৎসবমুখর’ পরিবেশে চলছে চোরাচালান বানিজ্য,

 

বিট অফিসার এস আই উৎসবের সাথে রয়েছে চোরাকারবারিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ।

যার কারনে রাতের আঁধারে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে আসা অবৈধ পণ্য ডি আই পিকাপ কাভারভ্যান গাড়ি দিয়ে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন জাগায়।

 

সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখাযায় প্রতি দিন সন্ধ্যা হলেই সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারীদের অবাধ বিচরন ।

স্থানীয় জনসাধারণ সঙ্গে কথা বলে জানাযায় সীমান্তের এলাকার গ্রামের মেঠোপথ গুলো চোরাচালানকারীরা নিরাপদ রোট হিসাবে ব্যাবহার করে।

 

চোরাকারবারীরা এলাকার প্রতাভশালীও বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ব্যাক্তি হওয়াতে এলাকার লোকজন ভয়ে কিছু বলতে পারে না,

 

গত ৫ই আগষ্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের জেরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে কিছুদিন বন্ধ ছিল সীমান্তের চোরাচালান।

বেশ কিছুদিন যাবৎ থেকে আবারও তৎপরতা শুরু হয়েছে, এবং চলছে নতুন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লাইনম্যান সিন্ডিকেট নিয়োগের তৎপরতা।  

 

মাঝেমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে চিনি ভর্তি গাড়ী, ভারতীয় গরুসহ ডি-আই, পিক-আপ গাড়ী আটকের খবর পাওয়া যায়, কিন্তু আটককৃত গরুর ক্রয়কৃত রশিদ নিয়ে থানায় গেলেও বৈধতা পায় না রশিদটি, ক্রেতা ইজারদার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের দায়সারা উত্তর।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধ্য জাফলং রাধানগর পুলিশ চেকপোষ্টের দায়িত্বে আছেন এস আই উৎসব কর্মকার, তার লাইনম্যান হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর আব্দুল্লাহ, যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী কামরুল, যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী জসিম, যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী খাইরুল ও  রাধানগরের কামাল আহমদ।

এই লাইনম্যানরা এক একটি করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। সেই সিন্ডিকেটের কোনো সদস্য বিজিবির গতিবিধি বা অবস্থান লক্ষ্য করেন। বিজিবি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় টহলে গেলেই তারা সীমান্তে গিয়ে মাদক, ভারতীয় গরু, মহিষ, চিনি, কসমিটিকস, কিটসহ বিভিন্ন আমদানী নিষিদ্ধ পন্য নিয়ে আসে।

 

মাঝে মধ্যে সেই গরু, চিনি সহ অন্যান্য পন্য আনতে গিয়ে ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে একের পর এক বাংলাদেশি নাগরিক ।

 

বিনিময়ে মাদক ও গরু ব্যবসায়ীদের ওই সিন্ডিকেটকে গরু প্রতি কমিশন দিতে হয়। বিজিবি, জেলা ডিবি পুলিশ, থানা পুলিশের, নাম ভাঙ্গিয়ে সেই টাকা তুলে থাকেন কথিত লাইনম্যান খ্যাত আব্দুল্লাহ, কামরুল, জসিম, খাইরুল,ও কামাল।

 

গরু,মহিষ,চিনি,পেয়াজ,অস্ত্র, মাদক, বিভিন্ন ব্রান্ডের মোটরসাইকেল। চোরাই পথে আসা এসকল পণ্যের সরকারি কোন বৈধতা না থাকলেও মধ্য জাফলংয়ের রাধানগর পুলিশ চেকপোস্টের স্থানীয় থানা পুলিশের এস আই উৎসব কর্মকার নিজের ফোর্স ও স্থানীয় লাইনম্যান নিয়োগ দিয়ে চোরাইপথে আসা ভারতীয় পণ্যের উপর দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

স্থানীয় প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা ব্যক্তিদেরকে আব্দুল্লাহ, কামরুল, জসিম, খাইরুল ও কামাল তাদের সকলের পরিচয় পুলিশ কিংবা বিজিবির লাইনম্যান হিসাবে।

 

প্রতিমাসে চোরাচালানের এই লাইনম্যান আবার রদবদল করেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, সার্কেল এএসপি, বিট অফিসার, জেলা উত্তর ডিবির নিয়োগপ্রাপ্ত ওসি ও বিজিবির বিভিন্ন ক্যাম্প কামান্ডাররা।

 

যার ফলে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি, বা জেলার এসপির কোন নির্দেশ বা আদেশ কার্যকর হচ্ছেনা গোয়াইনঘাট থানা এলাকায়।

 

সিলেট রেঞ্জে ডিআইজি মাসিক অপরাধ পর্যালোচনায় সভায় এসব সীমান্তের চোরাচালান বন্ধ করতে জেলার এসপিদের কঠিন নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন।

 

কিন্তু কোন নির্দেশনাই আমলে নেননি গোয়াইনঘাট থানার বিট অফিসার এস আই উৎসব কর্মকার । তবে চোরাচালান বন্ধের বদলে পাল্টেছে চোরাচালান সচল রাখারার নিত্য নতুন কৌশল।

 

আগে প্রতি মাসে সীমান্তেরঘাট অলিখিত ইজারা দেওয়া হতো মাসিক লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে।কিন্তু এখন চলছে কমিশনের খেলা।

 

সরেজমিন অনুসন্ধানে গোয়াইনঘাট এলাকায় গেলে নতুন করে উঠে আসে চোরাচালান ও চোরাকারবারীদের নতুন নিয়ন্ত্রকদের নাম।

এদের বেশীর ভাগই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পরিচয়দানকারী রাজনৈতীক লেবাসধারী সুবিধাভোগী।

আগে এসব চোরাচালানের লাইন নিয়ন্ত্রণ করতো স্থানীয় আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, ও শ্রমিকলীগের নেতারা।

 

গত ৫ই আগষ্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের জেরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে এসব লাইন বর্তমানে নিয়ন্ত্রন করছেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, ও শ্রমিকদলের নাম ব্যাবহারকারী কতিপয় কিছু লেবাসধারী পাতি নেতা।

সীমান্তের দায়িত্বে থাকা বিজিবির সামন দিয়ে এসব চোরাচালানের পন্য দেশে প্রবেশ করলেও টাকার কাছে সকলেই ম্যানেজ হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন।

এসব বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট- কোম্পানীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাইদুর ইসলামের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি ।

এসব বিষয়ে জানতে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সরকার তোফায়েল আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়টি আমার জানানেই,আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আপরাধের সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 

এ ব্যপারে জানতে বিট অফিসার এস আই উৎসব এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এলাকায় নতুন এসেছি,এখন আমি ব্যস্ত আছি বলেই তিনি ফোন কেটে দেন ।

এ ব্যপারে লাইনম্যান খ্যাত যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী কামরুলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন হ্যাঁ আমিই লাইন চালাচ্ছি ,এবং সবকিছু ম্যনেজ করে চালাচ্ছি। একথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এ ব্যপারে ফ্যসিবাদের দোসর আব্দুল্লাহ মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

 

এ ব্যপারে যুবদল নেতা পরিচয়দানকারী জসিম, খাইরুল ও  রাধানগরের কামাল আহমদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা সাংবাদিক পরিচয় পওয়ার সাথেসাথেই ফোন কেটে দেন ।