শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও শ্রমিকরা ধর্মঘট করে যাবে

নূর মোহাম্মদ সাগর শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

গত (২০ আগস্ট) শনিবার ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে চা শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণের দাবীতে চা শ্রমিকদের ৮ দিনের আন্দোলনে মজুরি বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে,সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও চা শ্রমিকরা মেনে নেন।

চা শ্রমিকদের ৮ দিনের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করতে শনিবার বিকেল তিনটায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ নেতৃত্বে শ্রম অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি, মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া, শ্রম অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক নাহিদুল ইসলাম, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. সাদিকুর রহমান প্রমুখ সহ চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগামী কাল থেকে কাজে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন মৌলভীবাজারের মান্যবর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।

১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে মজুরি ৩০০ টাকা নির্ধারণের দাবীতে চা শ্রমিকদের ৮ দিনের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করতে শনিবার বিকেল তিনটায় শ্রীমঙ্গলে শ্রম দপ্তরের উপ পরিচালকের কার্যালয়ে এক সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর সকল স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উপস্থিত শ্রমিক নেতারা সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু শ্রমিকদের জন্য ১৪৫ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা তারা মেনে নিয়েছেন।

এরপর শনিবার থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে বলে ঘোষণা দেন চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা।

কিন্তু এর তিন ঘন্টা পর রাত ৮ টায় প্রায় তিন শতাধিক সাধারণ শ্রমিক শহরের চৌমুহনা চত্ত্বর অবরোধ করে রাখেন। রাস্তা অবরোধ করে ‘১৪৫ টাকা মজুরি মানিনা’ এমন স্লোগান দেন শ্রমিকরা সহ বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খাইরুল আক্তার এসব কথা বলেন। খাইরুল আক্তার হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা বাগান থেকে এসে শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দিয়ে এমন মন্তব্য করেন।

দাবি মেনে নিয়েও কেন শ্রমিকরা আবার আন্দোলন করছে? বৈঠকে আপনি সিদ্ধান্ত মেনে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন এখন কেন সাধারণ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছে? এমন প্রশ্ন করা হলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, আমি ওই বৈঠকে যা বলেছি তা প্রত্যাহার করে নিলাম। শ্রমিকরা ৩০০ টাকা কমের নিচে মজুরি মানে না।

এ ব্যাপারে চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন,তিনি ওই বৈঠক যা বলেছেন তা প্রত্যাহার করেছেন এবং শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যহত থাকবে।

শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলে শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল হোসেন শ্রমিকদের অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করলেও তাতে তারা কর্ণপাত করেননি।

তাছাড়া মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান শ্রমিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে শ্রমিকরা তাকেও এড়িয়ে যান।

Leave a Reply