শাহরিয়ার শাকিল, বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
বহুল আলোচিত জুড়ীর পলাতক সেই আদম ব্যবসায়ী অবশেষে আমিরাতে আটকের পর জনতার গনধোলাইয়ের শিকার। জানাযায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ৬ নং সাগরনাল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জাঙ্গালিয়া গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে মোঃ সাইদুল ও একই গ্রামের মোস্তফা উদ্দিন ছেলে দেলোয়ার হোসাইন ও এর বিরুদ্ধে টাকা বিদেশে নেওয়ার নামে কয়ক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে দেশে ও বিদেশে।
দুবাইতে ঐ ২ প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে উম আল কোয়াইন সিটি ইউনাইটেড আরব আমিরাত থানায় । উম আল কোয়াইন সিটি ইউনাইটেড আরব আমিরাত থানায় মামলা হয়েছে (নাম্বার (202201022454) ক্রিমিনাল ইউনিফাইড নাম্বার 24291216.)।
সরজমিন অনুসন্ধানে জানাযায়, ভুক্তভোগী দুবাই প্রবাসী জসিম উদ্দিন দুই প্রতারক সাইদুল এবং দেলোয়ারের কাছে ভিসা ভাবত বাংলাদেশী টাকায় চার লক্ষ ৪৬ হাজার ৪০০ টাকা পাবে।
সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে ইমন আলী বলেন, ভিসা দেওয়ার নামে সাইদুলের কাছে নগদ ৪০ হাজার টাকা দিলে একমাস থেকে সে আর ভিসা/টাকা কিছুই না দিয়ে প্রতারকরা আত্মগোপন করে পালিয়ে আছে।
ভুক্তভোগী জামাল আহমেদ বলেন, একই কায়দায় দেলোয়ারের কাছে বাংলাদেশী টাকায় এক লক্ষ ২১ হাজার ৬০০ টাকা। সে আমাদের পাসপোর্ট ও টাকা নিয়ে পালিয়েছে। তার মোবাইল ফোনের নাম্বার বদলে ফেলেছে।
ভুক্তভোগী দুবাই প্রবাসী নাজমুল ইসলাম বলেন, সহজ সরল প্রবাসী বাংলাদেশীদের মিষ্টি কথার জালে জড়িয়ে মুহুর্তে আমাদের সকলের টাকা নিয়ে অন্যত্র আত্মগোপন করে পালিয়ে যায় প্রতারক সাইদুল ও দেলোয়ার হোসাইন।
আরো বলেন, প্রতারক সাইদুল ও দেলোয়ার হোসাইন প্রতারণার স্বীকার হয়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী তাদের বৈধতা হারাতে বসেছে | অসংখ্য বাংলাদেশীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়েছে উক্ত প্রতারক সাইদুল ও দেলোয়ার হোসাইন তাদের সাথে আমাদের কাজের চুক্তিপত্র হয়েছে সেটা আমাদের কাছে আছে কাগজপত্র আছে আইনগত ব্যবস্থা খুব শীগ্র বাংলাদেশ এদের বিরুদ্ধে মামলা করব। আমার কাছ থেকে দেলোয়ার এবং সাইদুল ভিসা দেওয়ার কথা বলে বাংলাদেশী টাকায় ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। আমার চারজন লোককে উম আল কোয়াইন সিটিতে (Falcon pack ফাল্গুন প্যাক) প্যাকিং কোম্পানিতে ভিসার ব্যবস্থা এবং কাজের ব্যবস্থা করে দিবে বলে আমার চারজন লোক এবং চারটি পাসপোর্ট ও ১১৭৫০ দিরহাম যা বাংলাদেশী টাকায় তিন লক্ষ ছাব্বিশ হাজার ৮০০ টাকা এবং টাকা এবং পাসপোর্ট দেওয়ার পর তার কথামতো কাজ করে দেয়নি, চারজন লোককে কাজের ব্যবস্থা এবং ভিসার ব্যবস্থা করে দেয়নি। আমার চারজন লোক ভিজিট ভিসার লোক ছিলো একজন আমার ফুফাতো ভাই একজন আমার তালতো ভাই ও একজন আমার চাচাতো ভাই এবং আরো একজন আমার বন্ধুর ছোট ভাই ছিলো।
এই চারজন ভিজিট ভিসায় ইউনাইটেড আরব আমিরাতে এসেছিল। তিন মাসের ভিজিট ভিসার ছিলো। সাইদুল এবং দেলোয়ার কাজের এবং ভিসার ব্যবস্থা করে দিবে বলে তিন মাস এরকম করে আমার সাথে কোন ব্যবস্থা করে দেয়নি।
তিন মাস আমি অপেক্ষা করি। কোন কিছু করে দেয়নি, তিন মাস গত হওয়ার পর আমি অনেক টাকা লাগিয়ে আবার ওদের ভিজিট ভিসা নবায়ন করি।
তিন মাস গত হওয়ার পর আমি তার সাথে যোগাযোগ করলে টাকা পাসপোর্ট রিটার্ন দিবে বলে আমার সাথে ওয়াদা করে। অনেক তারিখ ও করে আমার সাথে কিন্তু কোন তারিখ মতো আমাকে একটি টাকাও দেয়নি।এরপর কিছুদিন পর নাম্বার চেঞ্জ করে দেয় স্থান পরিবর্তন করে নেয় এবং আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর আমি বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করতে তাদের সাথে ব্যর্থ হই। তারপর একজন আইনজীবীর পরামর্শ দ্বারা আমি ইউনাইটেড আরব আমিরাতের উম আল কোয়াইন সিটিতে সাইদুল এবং দেলোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা করি। তারা যে আমার কাছ থেকে টাকা এবং পাসপোর্ট নিয়েছে তার সব কাগজপত্র ডকুমেন্ট চুক্তি নামা ও মামলার সব কাগজপত্র আমার কাছে আছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মুসলিম উদ্দিন জানান সাইদুল আমার এলাকার ছেলে তার ব্যাপারে শত শত কমপ্লেন আছে তার বাড়ির কেউ দায়িত্ব নিতে চান না অনেক মানুষে টাকা পান সে এখন লাপাত্তা তার কোন খবর নাই তার কাছে অনেক মানুষে টাকা পান আমরা শুনেছি বিদেশ বুঝি যারা টাকা পাবেন তারা নাকি অনেক দিন আগে তাকে আটক করেছেন ।
তিনি আরো বলেন, অনেক মানুষ বড়লেখা ও চুনারুঘাট হবিগঞ্জ এবং জুড়ী জালালপুরের এলাকার মানুষ আমাদের কাছে এসেছেন পর তাদের গার্জেনের কাছে নিয়ে যায় তার বাবা- ভাই কেউ দায়িত্ব নেন না সবে বলেন সাইদুলের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নাই এটা বলে তারা এড়িয়ে যান এখন আপনারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন
অভিযুক্তের সাইদুল হোয়াটসঅ্যাপে রেকর্ড এর মাধ্যমে বলেন যারা টাকা পাবেন তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে বলে আমার চোখের সামনে পড়ে গেলে দুনিয়া থেকে তাদেরকে উঠাইয়া ফেলবো আমিরত থেকে। আরো বলেন আমিরতের মাটিতে সাইদুলের বা.. ছেড়ার মত কেউ নাই কোন গো থাকলে কইও টাকা নিতো এ ধরনের নোংরামি ভাষায় হুমকি দিয়েছে।
সম্প্রতি সে আটক হলে মুচলেকার মাধ্যমে ছাড়া পেলেও সে পরবর্তিতে ভোক্তভোগীদের অর্থ, পাসপোর্ট কিংবা তাদের পাওনা ফিরি্য়ে না দিয়ে আবারও আত্মগোপনে চলে যায়। আরব আমিরাতে তার বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও ভোক্তভোগীরা দেশে কয়কটি পৃথক পৃথক মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানাযায়।
অভিযুক্তের দেলোয়ার হোসাইনের মোবাইলে অসংখ্যবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি |